ভারত সরকারের ওই সূত্র আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে নিয়ন্ত্রিত কথার অর্থ সব গেট একই উচ্চতায় খোলা হয়নি। কোথাও একটি গেটের ১০ বা ১২ ফুট খোলা হয়েছে তো অন্য কোথাও গেট খোলা হয়েছে ৩ বা ৪ ফুট। ফলে সব গেট দিয়ে একই পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে না।’ যাতে কোথাও বন্যা না হয়, সেটা মাথায় রেখেই এটা করা হচ্ছে বলে ওই সূত্র জানান।

২৪ আগস্ট ফারাক্কার গেটগুলো খুলে দেওয়ার পর পানি ছাড়া শুরু হয়। তবে এতে গত দুই দিনে নদ-নদীতে উল্লেখযোগ্যভাবে পানি বাড়েনি বা বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানান তিনি। এর প্রমাণ হিসেবে ভারতের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘জল বাড়লে পদ্মায় তা বাড়ার আগে মুর্শিদাবাদের উত্তরে ফারাক্কা ব্লক এবং শামসেরগঞ্জ ব্লক আংশিকভাবে ভেসে যেত, যা গত দুই দিনে হয়নি।’ নিয়ন্ত্রিতভাবে পানি ছাড়ার কারণেই ফারাক্কার ভাটির দুই জেলায় পানি বাড়েনি বলে জানান তিনি।

তবে একই সঙ্গে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিহারে গঙ্গায় যদি পানির মাত্রা বাড়তে থাকে, তবে আগামী কয়েক দিনে কী হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

ফারাক্কা থেকে বেরিয়ে যেসব খাল (ফিডার ক্যানাল) মুর্শিদাবাদের অন্যান্য জেলা হয়ে ভাগীরথী দিয়ে দক্ষিণবঙ্গে ও কলকাতায় পৌঁছাচ্ছে, সেগুলোতেও পানির মাত্রা বাড়েনি। ‘ফিডার ক্যানালে’ পানি বাড়লে মুর্শিদাবাদের অন্যান্য জেলা যেমন রঘুনাথগঞ্জ বা সুতিতে তা প্রবেশ করত, যা এখনো করেনি। ভাগীরথীতে পানি সামান্য বাড়তে পারে। তবে তার কোনো প্রভাব এখনো লক্ষ করা যাচ্ছে না বলে ওই সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ফারাক্কা থেকে যেখান দিয়ে পানি বাংলাদেশে ঢুকেছে, সেসব পয়েন্টে পানি বাড়তে দেখা যায়নি। তবে খুলনা ও বরিশালে বৃষ্টি বেড়ে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে জানা গেছে।

ফারাক্কা থেকে যে পানি আসে, তা পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গা হয়ে বাংলাদেশে রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্ম নদীতে প্রবেশ করে পাংখা পয়েন্ট দিয়ে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আজ ওই পয়েন্টে পানির স্তর ২০ দশমিক ৫, যা বিপদসীমার (২২ দশমিক ৫) নিচে রয়েছে।

খবর সূত্র: প্রথম আলো
ছবি: কালের কন্ঠ