সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।। খোয়াই নদীতীরে আমরা ময়লা - আবর্জনা দেখতে চাই না। সবুজ দেখতে চাই। নদী ও তীর সুরক্ষিত দেখতে চাই। যারা ময়লা আবর্জনা ফেলছেন তারা অন্যায় করছেন। কোনো মানুষ নদী বানাতে পারেনা। নদী প্রাকৃতিক। যেহেতু মানুষ নদী বানাতে পারেনা, সেহেতু নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলতেও পারেনা। এই অন্যায় কাজ যারা করছেন তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। খোয়াই নদীতীরে গাছের চারা লাগানো কর্মসূচিতে বক্তারা একথা বলেন।

পানি ও জলবায়ু অধিকার নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্স এর রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে "নদীতীরে সবুজায়ন" শিরোনামে আজ শনিবার (১৭ আগস্ট) খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার খোয়াই নদীতীরে-এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেলের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও পরিবেশ সংগঠক অধ্যাপক মোঃ ইকরামুল ওয়াদুদ, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, কবি ও সামাজিক সংগঠক তাহমিনা বেগম গিনি ও মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন হবিগঞ্জের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম চৌধুরী।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট বিজন বিহারী দাস, প্রাকৃতজন পরিচালক রওশন আরা, গাছ মামা খ্যাত মো: রায়হান, প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান সাদি, পরিবেশকর্মী সাইফুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মহিবুর রহমান, অসার্ড এর প্রধান নির্বাহী মোঃ মোতাকাব্বির খান, মোহাম্মদ উজ্জল মিয়া , জন্টু সূত্রধর, তাওসিফ হোসেন প্রমুখ।

অধ্যাপক ইকরামুল ওয়াদুদ বলেন, খোয়াই একসময় খরস্রোতা নদী ছিল। উজানে ভারত সরকারের পানি সীমিতকরণ, দেশের অভ্যন্তরে  বালু - মাটি উত্তোলন, খোয়াইমুখ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলে নদীটিকে বিনষ্ট করা হচ্ছে। পুরাতন খোয়াই নদী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দখল- দূষণে পুরাতন খোয়াই এর বর্তমান চিত্র ভয়াবহ। বর্তমানে পুরাতন খোয়াই নদী ময়লাবাহী ড্রেনে রূপ নিয়েছে। পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পুরাতন নদীটিকে দখল ও দূষণমুক্ত করে সচল করার দাবি জানান তিনি।

খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য সবুজায়নের বিকল্প নেই। আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান উপকরণ হলো অক্সিজেন। গাছ থেকে পাওয়া অক্সিজেন গ্রহণ করে আমরা বেঁচে থাকি। গাছ শুধুমাত্র পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, মাটির ক্ষয়রোধ, বন্যা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকেও আমাদের রক্ষা করে। বিভিন্ন অজুহাতে গাছ কেটে ফেলা হয়। যা মানুষ এবং প্রাণীকূলের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। পরিবেশকে সুন্দর রাখতে, খোয়াই নদী ও নদী তীরকে সুরক্ষিত রাখতে গাছ লাগানো এবং সংরক্ষণে মনোযোগী হতে হবে।

অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল বলেন, বর্তমানে হবিগঞ্জে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। ব্যক্তি-গোষ্ঠী পর্যায়ে পরিবেশ বিনষ্ট তৎপরতা ও অসচেতনতা উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনাহীনতা ও জনসাধারণের অসচেতনতার কারণে খোয়াইয়ের নাব্যতা কমে গেছে। নদীটিকে দ্রুত খনের আওতায় আনা জরুরি।

তাহমিনা বেগম গিনি বলেন, এই শহরের ভিতরে এত সুন্দর একটি নদী আছে যা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। এটিকে সংরক্ষন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

গাছ মামা হিসেবে খ্যাত মো: রায়হান বলেন, আমাদের পরম বন্ধু গাছ, আজকের লাগানো গাছ নদীতীরকে সুরক্ষিত করবে। এলাকার পরিবেশ সুন্দর হবে। গাছে পাখি বসবে। প্রাণ ফিরে আসবে।

পরে অতিথিবৃন্দ ও এলাকাবাসী নদী তীরে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় গাছ রোপন করেন।