মহেশখালী প্রতিনিধি।। ককসবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় গোরকঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ে ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ে দিন ব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ৮ অক্টোবর ২০২৪ মঙ্গলবার সকাল ৮ টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পরিবেশ নিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা প্রধান মুহাম্মদ ইকবাল ফারুক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুবকর ছিদ্দিক, স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৃষ্টি রাম দে, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর কমুউনিকেশান ও এডভোকেসি বিভাগের প্রধান ম্যানেজার মামুন কবীর, সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম, মহেশখালী উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আ ন ম হাসান,  অনুষ্ঠানে ছাত্র ছাত্রী এবং অতিথিরা জীবাশ্ম জ্বালানি নয় নবায়নযোগ্য জ্বালানিই জ্বলবায়ু পরিবর্তনে ভুমিকা রাখতে পারে মর্মে বিভিন্ন যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করেন।

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা ধরার মহেশখালী উপজেলা আহ্বায়ক জে এইচ এম ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচি সমুহে স্কুলের বিভিন্ন পদের শিক্ষক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ছাত্র ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

তরুণ সাংবাদকর্মী শেখ আব্দুল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে তিন অধিবেশনে ৬ জন শিক্ষক বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ী ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

বিকেলে গোরকঘাটা এলাকায় উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উঠান বৈঠকে মহেশখালীর পরিবেশ রক্ষায় বক্তব্য রাখেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর কমুউনিকেশান ও এডভোকেসি বিভাগের প্রধান ম্যানেজার মামুন কবীর। এসময় উপস্থিত ছিলেন গোরকঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৃষ্টি রাম দে, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা প্রধান মুহাম্মদ ইকবাল ফারুক, পরিবেশ সংগঠক জে এইচ এম ইউনুস। 

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় তিন পার্বত্য জেলায় চলছে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ। একই সঙ্গে চলমান রয়েছে পরিবহন ধর্মঘটও। এতে সাজেকে ভ্রমণে গিয়ে আটকা পড়েছেন আট শতাধিক পর্যটক।

এর আগে শনিবার সকাল থেকে তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

একই সঙ্গে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনায় বাস, সিএনজি অটোরিকশা, ট্রাক ভাঙচুর ও শ্রমিক আহতের প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিক যৌথ বিবৃতিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়।

খাগড়াছড়ি জিপ গাড়ির লাইনম্যান মো. ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ও দুপুর মিলে ১১৫টি জিপ এবং ৫০-এর বেশি সিএনজিচালিত মাহেন্দ্র গাড়ি সাজেকে প্রবেশ করে। প্রতিটি জিপে ১২-১৪ জন এবং মাহেন্দ্রতে ৪-৫ জন যাত্রী যেতে পারেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইউপিডিএফের অবরোধের ডাকে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আগুন দেয় অবরোধকারীরা।

শুনেছি, বেইলি সেতুগুলো থেকে পাটাতন খুলে নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় পর্যটকদের বহন করা গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সমিতির পক্ষ থেকে কোনো গাড়ি সাজেক থেকে আজ ফেরেনি।’

সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মন বলেন, ‘অবরোধের কারণে সাজেকে ৮ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। পরিস্থিতি ভালো হলে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।’

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, ‘অবরোধের কারণে ঝুঁকি থাকায় কোনো গাড়ি আজ ছাড়া হয়নি। সাজেকে পর্যটকরা আটকা পড়েছেন।

পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোটরসাইকেল চুরির একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার পিটুনিতে মো. মামুন নামের এক যুবক প্রাণ হারান। এ ঘটনার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিলের পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে পার্বত্য শহর রাঙামাটিতেও।

 

ঢাকাসহ দেশের ১৬ অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বুধবার বেলা ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়- রংপুর, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। ৬২তম শিক্ষা দিবসের এ সমাবেশে কোটা পুনর্বহালের পাশাপাশি পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং মাতৃভাষায় প্রথমিক শিক্ষা চালুর দাবি জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙামাটি শহরের প্রধান সড়কে মিছিলটি প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহযোগী ছাত্রসংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা, রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমা, সাধারণ সম্পাদক মরম্রি মারমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মারমা, হিল ইউমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক উলিচিং মারমা প্রমুখ।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমা বলেন, ‘আমরা দেখেছি, যার টাকা আছে, সে উন্নত শিক্ষা নিতে পারে। যার টাকা নাই, সে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। সারা দেশের তুলনায় পাহাড়ে শিক্ষাব্যবস্থা আরো বেশি খারাপ।

দুর্গম এলাকায় অনেক শিক্ষক ঠিকমতো থাকেন না। অনেক বিদ্যালয়ে বর্গা শিক্ষক রাখার অভিযোগও পাওয়া যায়। এই শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার।’

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা বলেন, ‘আমাদের পিছিয়ে রাখার জন্য সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ কোটা থাকলেও সংস্কারের নামে পরে তা এক শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

কেন আমাদের সঙ্গে এই বৈষম্যমূলক আচরণ করা হলো? আমাদের পূর্বের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। না হলে পাহাড়ের মানুষ সমতলের মানুষের তুলনায় আরো পিছিয়ে যাবে। পাহাড় পিছিয়ে থাকলে দেশ কখনো এগিয়ে যেতে পারে না।’

তা ছাড়া সমাবেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে তিন পার্বত্য জেলায় পৃথক ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে দ্রুত সময়ে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচনের দাবিও জানানো হয়।

 

 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।। "নদী দূষণ বন্ধ কর, প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ কর" এই শ্লোগানকে ধারণ করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার এবং বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চার যৌথ আয়োজনে আজ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, সকাল ১০ টায় কামরাঙ্গীরচরে হাজী আব্দুল আউয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে বিশ্ব নদী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচিগুলোর মধ্যে ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, পুরষ্কার বিতরণ, বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ের খোলামোড়া ঘাটে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান ইত্যাদি।

ধরা এবং বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চার অন্যতম নেতা ইবনুল সাঈদ রানা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ। সভাটি পরিচালনা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ফারুক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, আমার ছোটবেলায় আমি যে নদী দেখছি আর এখন যে নদী দেখছি, তা আমাকে হতাশ করে। একসময়ের টলমল করা বুড়িগঙ্গা আজকে দুর্গন্ধময় নদী। আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। বিশ্বের আর কোথাও এতো নদী নেই। কিন্তু আমরাই বেশি নদী দূষণ করছি, দখল করছি। এখন আমাদের সচেতন হওয়া উচিত তাহলে এই দখল, দূষণ আর হবে না। দূষণ, দখল যে করবে তাকে শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে কারণ নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। আমাদের অভ্যাস করতে হবে যেন আমাদের দ্বারা দূষণ না হয়। এই অভ্যাসই হোক আমাদের নদী দিবসের অঙ্গীকার।

সভাপতির বক্তব্যে ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, আজকের নদী দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে নদী যেন দূষণ না হয়, দখল না হয়। আমরা যেন এই নদী দূষণে কোনভাবে দায়ী না থাকি। এই পৃথিবীর সবকিছুই আমার জন্য, তাহলে আমি কেন ক্ষতি করবো।

অতিথির বক্তব্যে ফয়সাল আহমেদ বলেন, আজকের দিনে আমার মনে হয় সকলের একটা শপথ নেয়া উচিত আর তা হল আমরা এই বুড়িগঙ্গা নদী নিজেরা কখনই দূষণ করবো না। আমরা চিপসের প্যকেট বা পানির বোতল নদীতে ফেলবো না। তাহলেই সম্ভব হবে দূষণ থেকে বেঁচে থাকা।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সচেতন নাগরিক সমাজ এর নির্বাহী পরিচালক এসএম জাহাঙ্গীর আদেল, নিরাপদ চিকিৎসা চাই এর মহাসচিব উম্মে সালমা, বনলতা নারী উন্নয়ন সংস্থ‘র চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান লতা, বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চার নেতা মানিক ব্যাপারী প্রমূখ।  আলোচনা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।

এর আগে একটি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হাজী আব্দুল আউয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট প্ল্যানেটিয়ার্স ক্লাব গঠন করা হয়। ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের যোগাযোগ ও অ্যাডভোকেসি বিভাগের ব্যবস্থাপক মামুন কবীর। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সদস্য আনিকা তাহসিন এবং শাহরিয়ার শাওন।

কর্মসূচির শেষে ধরা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার, বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চা এবং নবগঠিত প্ল্যানেটিয়ার্স ক্লাব এর উদ্যোগে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ের খোলামোড়া ঘাটে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।।  জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য সমগ্র এশিয়া মহাদেশে “এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন টু এন্ড কোল” কর্মসূচীর অংশ হিসাবে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে অন্য ৯ টি দেশের সাথে বাংলাদেশের উপকুলে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সন্নিহিত এলাকাসমূহে  প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হয়।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করা, বাংলাদেশে কয়লাদূষণ থেকে নদী ও জলাশয় রক্ষার সাথে সাথে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের দাবি জানানো হয়।

কর্মসূচিসমূহের মধ্যে ছিল কোহেলিয়া, পায়রা, পশুর এবং রাবনাবাদ নদীতে নৌ র‌্যালি এবং মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, তালতলিতে অবস্থিত বরিশাল পাওয়া প্ল্যান্ট, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের দাবিতে মোংলায় এবং পটুয়াখালী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সামনে মানববন্ধন।

এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক (এইএন), এবং গ্লোবাল ফাইট টু ইন্ড ফসিল ফুয়েল যৌথভাবে এশিয়াব্যাপী এই কর্মসূচির আয়োজন করে। বাংলাদেশে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও  ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, স্থানীয় সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসী যৌথভাবে এসকল কর্মসূচীর আয়োজন করে।

স্থানীয় আয়োজক সংগঠনসমূহের মধ্যে আমরা কলাপাড়াবাসী, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার, সেভ নেচার সেভ লাইফ, উপকূলীয় মুক্ত রোভার স্কাউটস, স্কাউটস গ্রুপ, কোহেলিয়া মাৎসজীবী সমিতি, মহেশখালী উপকূলীয় মৎসজীবী সমিতি এবং পায়রা নদী ইলিশ রক্ষা কমিটি উল্লেখযোগ্য। শুক্রবার নিম্নচাপের প্রভাবে সংঘটিত ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এই প্রতিবাদী কর্মসূচিতে শত শত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

কর্মসূচী উপলক্ষে এপিএমডিডি’র সমন্বয়কারী লিডি ন্যাকপিল বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে নতুন কয়লা প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ছে এবং বিদ্যমান কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো বন্ধের কার্যক্রম খুব ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন দেশের সরকার ও কর্পোরেশনগুলোকে অনুরোধ করছি, যেন তারা নতুন কয়লা প্রকল্পের সম্প্রসারণ অবিলম্বে বন্ধ করে এবং এশিয়ার বিদ্যমান কয়লা প্ল্যান্টগুলো দ্রুত বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো জলবায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আমাদের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভূমি, পানি এবং বায়ুকে দূষিত করেছে এবং প্রাচ্যের বৈষম্যকে আরও তীব্র করেছে।

ধরা’র সদস্য সচিব এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো স্থানীয় পরিবেশ এবং জনগণের জীবিকা হুমকির মুখে ফেলছে। একটি নদীবিধৌত পলিভুমি দ্বারা গঠিত ঘন বসতির বাংলাদেশে কয়লাদূষণ ফসল উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি আরো বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে নানা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আমরা তাদের ধন্যবাদের সাথে সাথে নোংরা কয়লার ব্যবহার বন্ধ করতে ‘নো কোল পলিসি’ গ্রহণ করার আহ্বান জানাই।  

উপকূলের ৪ টি “পাওয়ার হাব” সংলগ্ন এলাকাসমূহে অনুষ্ঠিত সকল কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্থানীয় মানুষ তাদের দাবির পক্ষে আওয়াজ তোলেন। বক্তাগণ বলেন, কয়লা প্রকল্পের কারণে নদীতে মাছের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে, যা স্থানীয় জেলেদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে নদীর পানিতে দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে জীববৈচিত্র্য ও জলজ সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে।

বক্তাগণ আরো বলেন, নদীর পানির মান খারাপ হওয়ার পাশাপাশি এলাকায় নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কয়লা প্রকল্পের কারণে তারা চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। এসময় পটুয়াখালী পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায় যা জনমনে শঙ্কা তৈরি করে।

অংশগ্রহণকারীগণ প্রতিবাদী শ্লোগান সম্বলিত নানা রঙের ব্যানার প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। তারা অবিলম্বে বাংলাদেশের সকল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি জানান।